কাফেলায় পথচলা এবং সম্পাদকীয়

  


প্রচ্ছদ

কাফেলা

একটি বার্ষিক পত্রিকা

নির্দেশনা ও সহযোগিতায় :

মাওলানা নাজিদ সালমান দা.বা.

মাওলানা আব্দুর রহীম দা.বা.

ব্যবস্থাপনায় :

ইয়ামিন ও আমান এবং ফাহিম

প্রকাশনায় :

কাফেলা পরিবার । দ্বিতীয় বর্ষ । মারকাযুল কোরআন আশরাফাবাদ

মরুর পথ অতিক্রম করে যায় হাজারো কাফেলা । কতক কাফেলা মরুর পথে হারিয়ে যায় । ফিরে আসে না আর কোনোদিন । অপরদিকে রয়েছে কিছু কাফেলা , নির্বিঘ্নে যারা পাড়ি দেয় মরুপথ । এদের বাহিরে রয়েছে আরো কিছু কাফেলা , আল্লাহর নুসরতে হাজারো বাধা-বিপত্তি সয়ে যারা পৌছে যায় আপন গন্তব্যে । এমনই এক কাফেলা হয়ে আমরা শুরু করেছি যাত্রা । দোয়া ও আশা করি , রাব্বুল আলামীন অবশ্যই সাহায্য করবেন এই কাফেলাকে ।

*************************************

সম্পাদকীয় ,

সবাই চায় বড় হতে , স্বপ্ন দেখে আকাশ ছোঁয়ার । হতে চায় মিনারের মত উঁচু , আসে শত বাঁধা । কখনো কেটে যায়, কখনো আবার আসে । কেউ সাহস নিয়ে যায় এগিয়ে , জীবন চলে তার আপন গতিতে । দিন কাটে রাত আসে মাস ঘুরে বছর আসে , সে স্বপ্ন দেখে নতুন করে । স্বপ্ন সাজে আপন সাজে । স্বপ্ন দেখে উদ্যান , সাজায় কল্পনার আল্পনায় । এসব দেখে ভেবে সে ব্যর্থ হয় যে কল্পনায় করে অবগাহন , ব্যর্থতার কারণ খুঁজে ফেরে না । পিছু ফিরে এর সময় সে বাধ্য হয় ব্যর্থতাকে সঙ্গী করতে । সে আর আশা করে না বড় হওয়ার । কিন্তু কেন ? সে কি পারে না পিছনে ফিরে জীবনকে নতুন করে সাজাতে ? পারে না সে জীবনকে বাজি রেখে এগিয়ে চলতে ? কেনো এই অক্ষমতা , সে কেন ভাবে না নিজেকে নিয়ে ? জীবন তো একটাই , তবু কেন বসে থাকে চেষ্টা না করে ? ধাক্কা দেই না কেন নিজেকে , সময় কি আসে নি এখনো ধাক্কা দেয়ার , নিজেকে বদলে নেয়ার ? জীবনকে রাঙাতে স্বপ্নের বর্ণিল পথে এগিয়ে যাওয়ার ?

চিন্তা ভাবনা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায় । জীবনকে চলার পথে প্রেরণা যোগায় । তাই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চিন্তা অপরিহার্য। চিন্তা আকলের খোরাক , জ্ঞানের ফলাফল । তবে চিন্তা হতে হবে কুফরীমুক্ত , বিদআতমুক্ত এবং সকল অনৈসলামিক মানসিতা থেকে বহুদূরের । চিন্তা চেতনার এগিয়ে যাওয়ার শক্তি আসে সততা থেকে । তাই চিন্তার সৎ ও সত্য হওয়া অপরিহার্য। জীবন গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো ছাত্রজীবন । কিন্তু কতজন এই সময়কে সদ্ব্যবহার করে নিজেকে গড়ে তুলে ? কালের আগ্রাসনের কালো থাবায় হারিয়ে যায় কত জীবন , ধূলিস্যাত হয়ে যায় কত স্বপ্ন ।

আচ্ছা , যামানা ও কালের সাথে যারা বদলে যায় তারা কি মহান হতে পারে ? কবি তো বলে গেছেন ভিন্ন কথা । বলেছেন , ”যামানার সাথে যারা বদলায় তারা বড় অসহায় । তারাই মহামানব , যারা যামানাকে বদলায় ।” সুতরাং আমাদেরকেই বদলাতে হবে , বদলে গেলে চলবে না । আজ থেকে চৌদ্দশত বছর পূর্বে পৃথিবী যখন ছিল ঘোর অন্ধকারে , শিরক-কুফরী-খুনখারাবি যখন স্বাভাবিক ছিল , তখন আল্লাহর প্রদত্ত ওহীর আলোকবার্তা নিয়ে আগমন করলেন শ্রেষ্ঠ মানব হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম । তার আগমনে পৃথিবী আলোর মুখ দেখতে শুরু করলো । তাঁর আহবানে সাড়া দিলো সকল শ্রেণীর মানুষ । এরপর এক সময় দুষ্ট লোকদের অত্যাচারের পর তিনি নির্দেশ পেলেন মদীনায়ে তাইয়্যেবায় হিজরত করার । হিজরতের দ্বিতীয় বছর সংগটিত হলো বদর যুদ্ধ । যুদ্ধের আগের রাতে নির্জন এক কোণে সিজদায় পড়ে দোয়া করছিলেন মহানবী সা. “ হে আল্লাহ , যদি মুসলমানদের এই ক্ষুদ্রদল ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে যমীনে আপনার ইবাদত বন্ধ হয়ে যাবে ।” এই দোয়াকে স্পষ্টভাবে মুসলিম শক্তির সুরক্ষার কারণ বলা হয়েছে । উল্লেখ হয়েছে নবীজি সা. এর প্রেরণের মূল উদ্দেশ্য । সেদিন আল্লাহর সাহায্যে মুসলমানদের বিজয় হয়েছিল । আল্লাহর ইবাদতের অপার শক্তি নিয়ে বিশ্ব সভ্যতার মঞ্চে ইসলামের আবির্ভাব ছিল অবিশ্বাস্য প্রভাবশালী । মাত্র কয়েক বছরে আল্লাহর ইবাদতকারী এই কাফেলা জয় করে নিলো অসংখ্য মানুষের হৃদয় । তারা দলে দলে আশ্রয় নিলো ইসলামের সুশীতল ছায়ায় ।

রাসূলের সুন্নাহ ও শরীয়তের নীতি অনুসরণ করে ইসলামী এই কাফেলা চলতে থাকে চৌদ্দশ বছর । প্রশান্ত মহাসাগরের প্রান্ত থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত, অস্ট্রোলিয়ার সীমান্ত থেকে আফ্রিকার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষ ইসলামের অনুশাসন মেনে চলে । আরববিশ্বকে ছাড়িয়ে পুরো পৃথিবীর অসংখ্য মুসলিম আন্তরিকভাবে বদরের সে কাফেলার একান্ত অনুসারী । এখনো দুনিয়াজুড়ে প্রশান্তির খেলাফত ব্যবস্থা ফিরে আসার প্রত্যাশায় দিন যাপন করে একশত সত্তর কোটি মানুষ । সে দুর্বার সাহসী কাফেলাটির সাথে যেন আমাদের এই কাফেলাটি যোগদানের সৌভাগ্য অর্জন করে সে প্রত্যাশায় আমাদের এ অগ্রযাত্রা ।


 

কপিরাইট আব্দুর রহমান আল হাসান 

পাওয়ার ডোনেট,  www.abdurrahmanalhasan.xyz



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu