আম্মুর মকতব

 

যোবায়ের আহমাদ ( চাঁদপুর ) ।

আমি তখন ছোট , নানা বাড়িতে থাকি কিছুদিন পর আম্মু মক্তব চালু করলেন সকালে আমাদের ঘুম ভাঙ্গার আগেই একদল ছেলে মেয়ে বাড়ির উঠানে হাজির হতো মামাবাড়ীতে খালি দুটি রুম ছিলো , সেখানে তারা জায়নামাজ বিছিয়ে বসতো তারপর সমস্বরে কায়েদা , আমপাড়া কোরআন শরীফ পড়তো সুরে  সুরে সরব করে তুলতো সকালের পরিবেশ মকতব পড়ানোর সময় আম্মুর কাছে থাকতো লম্বা একখানা বেত না পারতো কেউ দুষ্টমি করতে , না পারতো কেউ হাসাহাসি করতে সবাই মনোযোগ দিয়ে পড়তো কায়েদা , আমপাড়া কোরআন শরীফ পড়ানোর পর শেখানো হতো দোয়া মাসআলা ছেলে মেয়েরা আনন্দের সাথে তা মুখস্ত করতো মকতব যখন ছুটি হতো তারা আম্মুকে খুশিতে সালাম দিতো যেন আজ তাদের খুশির দিন একে অপরের জায়নামাজ টান দিয়ে দৌড় দিতো কেউ কেউ তার সাথিকে বাড়ীতে নিয়ে যেতো আমি শুধু দেখতাম আর ভাবতাম , আমি যদি এমন আনন্দ করতে পারতাম ? 

একদিন সকালে আম্মুকে বললাম , আমি কি কখনো এমন আনন্দ করতে পারবো ? আম্মু বললেন , তুমি তার থেকেও বেশি আনন্দ করতে পারবে অবশেষে আম্মু আমাকে ঢাকার গোড়ান এলাকার এক মাদরাসায় ভর্তি করে দিলেন আম্মু আমাকে আল্লাহর রাস্তায় রেখে ফিরে গেলেন কিন্তু আমি ছোট থাকায় অবুঝ হওয়ার কারণে আমার চোখ আম্মুর জন্য এক প্রবাহিত ঝর্ণায় পরিণত হলো

এভাবে আম্মুর জন্য কাঁদতে কাঁদতে কয়েক মাস কেটে গেল তারপর সকল সাথীদের সাথে থাকতে থাকতে তাদের সাহচর্যে আমার মন প্রফুল্লতা লাভ করলো ফলে পিছনের কিছু দুঃখ বেদনা কেটে গেলো তখন বুঝতে পেরেছিলাম , আম্মু সেদিন যে কথাটা বলেছিলেন , তার মর্ম আম্মু বুঝাতে চেয়েছিলেন , তুমি আল্লাহর রাস্তায় থাকলে আল্লাহ তোমাকে জান্নাত দিবেন ফলে তুমি সেখানে আনন্দ বিনোদন যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে , যা হবে এই এদের চেয়েও অধিক আনন্দের অবশেষে আম্মুর প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করছি দোয়া করছি , আল্লাহ তাআলা তাকে নেক হায়াত দান করেন এবং আমাকে দ্বীনের পথে অটল থাকার তাওফিক দান করেন ,

আমীন


ওয়েবসাইট আপলোড , আব্দুর রহমান আল হাসান
পাওয়ার ডোনেট , www.abdurrahmanalhasan.com

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu